ভাষা সৈনিক গাজীউল হকের ৯৩তম জন্মদিন, তার জীবনী

ভাষা সৈনিক পরিচয়ে বিখ্যাতদের মধ্যে অন্যতম একজন আবু নছর মোহাম্মদ গাজীউল হক। তিনি ছিলেন ১৯৫২ সালের বাংলা ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী, ৫২’র ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গকারীদের অন্যতম।

মহান এই ভাষা সৈনিকের ৯৩তম জন্মদিন আজ। জন্ম ১৯২৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া থানার নিচিন্তা গ্রামে। রাজনীতি সংগ্রাম ছিল তার রক্তে। বাবা মওলানা সিরাজুল হক ছিলেন সে সময়ের কংগ্রেস ও খেলাফত আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী। মা নূরজাহান বেগম।

গাজীউল হক ছিলেন একাধারে সাহিত্যিক, গীতিকার এবং ভাষা সৈনিক। ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত ভাষা দিবসের প্রভাতফেরি করা হতো তারই লেখা ‘ভুলব না ভুলব না ভুলব না এই একুশে ফেব্রুয়ারি ভুলব না’ গানটি গেয়ে।

পড়াশুনা ম্যাট্রিকুলেশন, আইএ বগুড়ায়। বিএ অনার্স, এমএ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার এমএ ডিগ্রি কেড়ে নেয়। পরবর্তীতে ছাত্রনেতাদের আন্দোলনে এমএ ডিগ্রি ফেরত দিতে বাধ্য হয়।

তিনি বগুড়ায় অধ্যয়নকালে ভাষা বিজ্ঞানী মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সংস্পর্শে আসেন। এই সময় তিনি বাম রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। বঙ্গীয় মুসলিম ছাত্রলীগ বগুড়া জেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক হন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, কাজী মোতাহার হোসেনের মত বিখ্যাত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে এসে ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনে অংশ নেন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বহুবার কারাবরণ করেন।

১৯৪৯ সালের দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় কাজ করেন। সেই সময় মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে যে ভুখা মিছিলটি বের হয়েছিল তাতেও অংশ নেন।

১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হলে আব্দুল মতিন এই কমিটির আহ্বায়ক হন। বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা কমিটি ১৯৫০ সালের ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা দিবস ঘোষণা করে। ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি পল্টনের জনসভায় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা দেন ‘উর্দু এবং উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’। এর প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ছাত্র হলে ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয় এবং ৩০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘট ঘোষণা করা হয়। ঘোষণা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলার ছাত্রসভায় গাজীউল হক সভাপতিত্ব করেন।

Comments (0)
Add Comment