পাকিস্তানকে ফের ঋণ সহায়তা দিচ্ছে চীন

ডন, রয়টার্স

অর্থনৈতিকভাবে দুর্দশাগ্রস্ত পাকিস্তানের জন্য নতুন করে ১৩০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে চীনের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক (আইসিবিসি)। শুক্রবার তারা এই ঋণের অনুমোদন দেয় বলে জানা গেছে। তাদের এই ঋণ দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে সাহায্য করবে বলে জানান পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার।

কার্যত অচল হয়ে পড়েছে পাকিস্তানের অর্থনীতি। তলানিতে ঠেকেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। দেশটির এই সংকটময় পরিস্থিতিতে এগিয়ে এসেছে চীন। বেইজিং ইতিমধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলার জরুরি অর্থ সহায়তা প্রদান করেছে দেউলিয়াত্বের দ্বারপ্রান্তে থাকা পাকিস্তানকে। পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার ঋণ সহায়তা পাওয়ার বিষয়টি টুইটারে নিশ্চিত করেছেন। এই ঋণ তিন কিস্তিতে ঢুকবে, তার মধ্যে প্রথম কিস্তির ৫০ কোটি ডলার এরই মধ্যে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পেয়েও গেছে, টুইটে এমনটাই বলেন তিনি। এটা বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াবে বলেছেন দার। তিনি জানান, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পাকিস্তান আইসিবিসিকে যে ঋণ পরিশোধ করেছিল, তা-ই আবার ফেরত পাচ্ছেন তারা। খবরে বলা হয়েছে, অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, চীনের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়না লিমিটেড (আইসিবিসি) পাকিস্তানকে সহায়তা প্রদানের জন্য ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণের অনুমোদন দিয়েছে। এটি তার দেশের ক্ষয়িষ্ণু বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে সাহায্য করবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

লেনদেনের ভারসাম্য বজায় রাখতে হিমশিম খাওয়া পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এমন জায়গায় পৌঁছেছিল, যা দিয়ে তিন সপ্তাহের আমদানি বিল মেটানোও অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। দেশটির বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে সহায়তার অংশ হিসেবে চীন এরই মধ্যে ইসলামাবাদকে ৭০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। দার বলেছেন, আগের ঋণ চুক্তি অনুযায়ী তারা যা পরিশোধ করেছিল, তার থেকে ২০০ কোটি ডলার ফের ঋণ দিচ্ছে চীন। জুনে শেষ হতে যাওয়া অর্থবছরের ঘাটতি মেটাতে বাইরে থেকেই ৫০০ কোটি ডলার দরকার পাকিস্তানের, বলেন তিনি। ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে চুক্তি করতে পারলে বাইরে থেকে আরো অর্থ পাওয়া যাবে। আইএমএফের সঙ্গে ঐ চুক্তি আগামী সপ্তাহের মধ্যে হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য দারের। আল্লাহ চাইলে, আমরা দেশকে এই কাদাজল থেকে বের করে আনতে পারবো,” ঋণখেলাপি হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে বলেন পাকিস্তানি এই মন্ত্রী।

তিনি আরো জানান, ‘এই অর্থ সহায়তা ৩ ধাপে দেওয়া হবে। প্রথম ধাপে দেওয়া হয়েছে ৫০০ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি ডলার। এর আগে দার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পাকিস্তান আইসিবিসি থেকে ঋণ সহায়তা পাওয়ার আশা করছে। যদিও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে পাকিস্তান এরই মধ্যে চীনের কাছ থেকে ৭০০ মিলিয়ন বা ৭০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, জুনে শেষ হওয়া এ অর্থবছরে ঘাটতি মেটাতে পাকিস্তানের ৫ বিলিয়ন ডলার বাহ্যিক ঋণ সহায়তার প্রয়োজন হবে। ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করার পরেই পাকিস্তান আরো বাহ্যিক ঋণ সহায়তা পাবে বলেও জানান তিনি। দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকি উড়িয়ে দিয়ে তিনি আরো বলেছেন, ‘অবশ্যই আমরা দেশকে এই সংকট থেকে বের করে আনব।’

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.