“ধীর হও, প্রত্যেক মানুষ আলাদা আলাদা স্বত্তা”

ফাহমিদা নবী, সংগীতশিল্পী

প্রত্যেক আঁধারের সাথে একটা করে জড়তার গিঁট খোলে। অভিজ্ঞতা বলে।

মানুষ তার সাধ্যের বাইরে যখন জীবনকে বাধ্য হয়ে একটা গতিতে ফেলতে পথ খোঁজে, তখনই একটা করে সাহসি সত্য না অথবা হ্যাঁ বলতে শিখে যায়, দেয়ালে পিঠ ঠেকলে যা হয়!

মন এবং বাস্তবতার মধ্যে বিশাল ফারাক এখন, বর্তমান যুগে।সময়ের অপশন এবং বেড়ে ওঠার কনফিউশন, কখনো নিজের মধ্যে মনগড়া অভিমান তৈরী করছে , কখনো বাস্তবতার দায়িত্বের চাপ এবং তাৎক্ষণিক না ভেবেই, রাগে হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো ভীষণ এক ভুল পদক্ষেপ নিয়ে ফেলে। যে পদক্ষেপে পথের মোড় কখনো সঠিক হয়না।

তাই ধীর হও, প্রত্যেক মানুষ আলাদা আলাদা স্বত্তা। সেই বিষয়টা বোঝার মতোন বুদ্ধিদীপ্ত হও। কারণ তুমি যখন আশা এবং নিরাশার দোলাচলে কি করবে সেই হতাশায় ভুগছো, ঠিক তখনই ভাবতে হবে, কারো উপর নির্ভর অথবা কারো জন্য অতি চিন্তিত হবার প্রয়োজন নেই। কারণ কারো জীবন তোমার মতো নয়, বা অন্যের জীবন তোমার মতো নয়। অর্থাৎ, এক ধরনের হলেও সতন্ত্র স্বত্তায় মানুষের বেড়ে ওঠার এই নিয়মকে বুঝে নিতে হবে।প্রয়োজন এবং চাওয়া যার যার মতো।

মন পড়ার অন্ধকার থেকে মুক্ত হয়ে অন্যকেও কাজ করার, নিজেকে নিয়ে ভাবার, বোঝার, তার নিজেস্ব লক্ষ্য স্থির করার চিন্তা করতে দাও। সবটাই তুমি করে দিতে চাইলে পারবেনা, বোঝার মতো জ্ঞানকে কাজে লাগাও, শুধু ভালোবেসে করেই যাওয়া কোনদিনই কঠিন বাস্তবতা মেনে নেয়না।

শুনতে খারাপ লাগলেও সত্যটা মানতে হবে। প্রকৃতির প্রত্যেকটি বিষয় যেমন নিজেস্বতায় বেঁচে থাকে, মানুষও তার নিজস্বতায় বেঁচে থাকতেই পছন্দ করে। হোক সে পাশের মানুষটি, কিংবা সন্তান অথবা যে কেউ!

এই সত্যটাকে মেনে অন্ধকারে না থেকে ভ্রান্ত বিশ্বাস থেকে মুক্ত হয়ে জড়তার গিঁট খোলো, নিজেকে নিয়ে ভাবো। নিজেও হাঁটো অন্যকেও হাটঁতে দাও। ছায়া বাঁচানো কি, তাকে শিখতে দাও।

হোক সে খুব প্রিয়, হোক সন্তান, হোক সে আপন কেউ
তাকে পথ হাঁটতে দাও, সংগ্রাম কি বুঝতে দাও।

একা হেঁটে হোঁচট খেয়ে শিখুক। তখনই সময়ের আয়নায় সব পরিস্কার দেখতে পাবে মূল্য দিতে শিখবে কিনা জানিনা, তবে শিখতে দিতে ছাড়তে হবে।

নিজে হাঁটতে গিয়ে হাড়ে হাড়ে টের পাবে সাধ্য কি আর সাধনা কি।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.