থাইল্যান্ড যাচ্ছেন রাজাপাকসে!

স্থির হতে পারেননি শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসে। তিনি সেই যে জনরোষে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, এখনও সেই অবস্থায় আছেন। তিনি মালদ্বীপ থেকে সিঙ্গাপুরে পাড়ি দিলেও সেখানে থিতু হতে পারছেন না। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার মন্ত্রীপরিষদের এক মুখপাত্র সংবাদ মাধ্যমকে জানান, তিনি সহসা দেশে ফিরছেন। এরপর প্রেসিডেন্ট রণিল বিক্রমাসিংহে তাকে এখনই দেশে না ফেরার পরামর্শ দেন। জানিয়ে দেন, তিনি দেশে ফিরলে আবার সেই উত্তেজনাকর অবস্থা তৈরি হতে পারে। সম্ভবত তার সেই পরামর্শ গোটাবাইয়া রাজাপাকসের কান পর্যন্ত পৌঁছেছে। তাই তিনি এখন সিঙ্গাপুর থেকে থাইল্যান্ড যেতে পারেন বলে দুটি সূত্র জানিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মিরর।

ওই দুটি সূত্র বলেছেন, বৃহস্পতিবার তিনি থাইল্যান্ড পৌঁছাতে পারেন। সেখানে তিনি অস্থায়ী আশ্রয় খুঁজতে পারেন।

গত মাসে দেশ থেকে জনরোষে পালানোর পর এটা হবে তার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ, যেখানে তিনি একটু আশ্রয় খুঁজছেন। এর আগে তিনি জনতার ক্ষোভের মুখে প্রথমে প্রেসিডেন্টের বাসভবন থেকে পালিয়ে যান। গভীর সমুদ্রে নৌবাহিনীর একটি বাহনে অবস্থান করেন। তারপর মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদের হস্তক্ষেপে সামরিক বিমানে করে ১৩ই জুলাই মালদ্বীপে চলে যান। কিন্তু এ খবর ফাঁস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানেও তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। উপায় না দেখে ওইদিন রাতে তার সিঙ্গাপুরে যাওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু কাউকে তিনি বিশ^াস করতে পারছিলেন না। ফলে রাতের বিমানে আরোহন করেননি। অবশেষে ১৪ই জুলাই সৌদি আরবগামী সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে পাড়ি দেন সিঙ্গাপুরে। তা নিয়েও চলে নানা নাটকীয়তা। সেখানে গিয়ে একটি হোটেলে অবস্থান নিয়ে ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন।
কয়েকদিন আগে তার দেশে ফেরার কথা শোনা যায়। কিন্তু দৃশ্যত বর্তমান প্রেসিডেন্ট রণিল বিক্রমাসিংহে তাকে এখনই দেশে ফেরার উপযুক্ত সময় নয় বলে পরামর্শ দেন। এমন অবস্থায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন দু’টি সূত্র বলেছেন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুর ত্যাগ করে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে পৌঁছাতে পারেন। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওদিকে থাই সরকারের মুখপাত্র রাটচাডা থানাডিরেক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন ‘নো কমেন্ট’।

দেশ ছাড়ার পর এখন পর্যন্ত জনসম্মুখে আসেননি শ্রীলঙ্কার সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। তিনি কোনো মন্তব্যও করেননি। এ মাসে সিঙ্গাপুর সরকার বলেছে, তারা তাকে কোনো দায়মুক্তি বা বাড়তি সুবিধা দেবে না। ৭৩ বছর বয়সী গোটাবাইয়া রাজাপাকাসে শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনীর একজন প্রভাবশালী সদস্য। পরে তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই সময় তামিলদের বিরুদ্ধে তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আছে। এ জন্য তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের তদন্ত দাবি করে কিছু অধিকার বিষয়ক গ্রুপ। এর আগে সরাসরি এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.