চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়ছে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ!

চট্টগ্রাম বন্দরে প্রথমবারের মতো ভিড়বে ১০ মিটার গভীরতার বড় জাহাজ। রোববার (১৫ জানুয়ারি) পরীক্ষামূলকভাবে বন্দর জেটিতে নোঙর করতে যাচ্ছে ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই জাহাজটি। এজন্য সকল প্রস্তুতি নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, জাহাজ ভেড়াতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে দক্ষ পাইলট। বড় জাহাজ ভেড়াতে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় গভীরতা বৃদ্ধি এবং পাইলটদের প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের প্রস্তুতিমূলক কাজও সম্পন্ন হয়েছে।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, এতদিন চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফট এবং ১৯৫ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়তে পারতো। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে বন্দরে উপর্যুক্ত ড্রাফট ও লেংথের জাহাজ নোঙর করে আসছে। এর আগে বন্দরে আরো ছোট জাহাজ ভিড়ত।

দীর্ঘ সময় ধরে বড় জাহাজ ভেড়াতে বড় বাধা ছিল কর্ণফুলী নদীর প্রবেশমুখ অর্থাৎ সাগর ও নদীর সংযোগস্থলের কম গভীরতা।

তবে লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘এইচআর ওয়েলিং ফোর্ড’-এর জরিপে ইতিবাচক সাড়া পেয়ে বড় জাহাজ ভেড়ানোর উদ্যোগ নেয় বন্দর। বড় জাহাজ ভিড়লে আমদানি-রফতানি খরচ কমার পাশাপাশি বন্দরে জাহাজজট কমে যাবে বলে দাবি বন্দর ব্যবহারকারীদের।

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বার্থিং করা চালু হলে ৩ হাজার ৫০০ টিইইউএস কনটেইনার পরিবহন করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ৯ থেকে ১৩ নম্বর জেটি এবং পিসিটি ও এনসিটিতেও ভেড়ানো যাবে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চিফ হাইড্রোগ্রাফার কমান্ডার আরিফুর রহমান বলেন, ‘গবেষণা প্রতিষ্ঠান যে রিপোর্ট দিয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার জাহাজের ট্রায়াল রান শুরু হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই রানে সফল হলে বিদেশি শিপিং কোম্পানিগুলোকে বড় জাহাজ পাঠানোর জন্য সার্কুলার দেয়া হবে। তখন বড় জাহাজ এলে বার্থিং দেব।’

তিনি আরো বলেন, বন্দরের ১৮টি জেটিতে একই ড্রাফট থাকবে না।

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) এবং চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনালে (সিসিটি) ১০ মিটার ড্রাফট দেয়া সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

এছাড়া জেনারেল কার্গো বার্থের (জিসিবি) কয়েকটিতে ড্রাফট বাড়ানো যাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজন বলেন, ‘আগের চেয়ে বেশি ড্রাফট এবং বেশি দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়তে পারলে একই সময়ে একই জাহাজে কনটেইনার পরিবহন বাড়বে। এতে পণ্য আমদানি-রফতানিতে খরচ কমে আসবে।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বের শিপিং সেক্টরের অনেক জাহাজই বন্দরে আসতে পারে না। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামে শিপিং ব্যবসা এবং আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের সাথে জড়িতরা দীর্ঘদিন ধরে বন্দরের লেংথ ও ড্রাফট বাড়ানোর বিষয়ে দাবি জানিয়ে আসছিলেন।’

তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ সুনিশ্চিত না হয়ে ড্রাফট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেয়নি বলেও জানান তিনি।

সূত্র : ইউএনবি

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.