ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ বুধবার বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে

বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। লঘুচাপটি (২২ মে) শনিবারই সৃষ্টি হতে পারে। পরে যা সুস্পষ্ট লঘুচাপ থেকে নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ, এরপর ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘যশ’। সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড় আগামী বুধবার (২৬ মে) বাংলাদেশের খুলনা উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
শুক্রবার ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উত্তর আন্দামান সাগর ও তত্সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। পরে এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বুধবার নাগাদ ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা উপকূলে পৌঁছতে পারে।

আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, ‘এই মাসে আবহাওয়ার যে অবস্থা, তাতে এ ধরনের লঘুচাপ তৈরি হতে পারে। আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসেও আমরা এই মাসে ঘূর্ণিঝড় হতে পারে বলে জানিয়েছিলাম। তবে লঘুচাপ পরিণত হওয়ার পর গতিবেগসহ নানা ব্যাপারে বিস্তারিত বলা যাবে।’

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, মধ্যম মানের এ ঘূর্ণিঝড়টি প্রবেশের সময় বাতাসের গতিবেগ সর্বোচ্চ হতে পারে ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার। গতিবেগ খুব বেশি না হলেও ভরা পূর্ণিমার কারণে উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাসসহ বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। গত বছরেও মে মাসে দেশে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ আঘাত হেনেছিল। তখন উপকূলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।
জানা যায়, বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার আঞ্চলিক কমিটি ঝড়ের নাম নির্ধারণ করে থাকে। যেমন ভারত মহাসাগরের ঝড়গুলোর নামকরণ এই সংস্থার আটটি দেশ করে। দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও ওমান। এবারের লঘুচাপটি যদি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয় তাহলে এর নাম হবে ‘যশ’, যার নাম দিয়েছে ওমান।

তা ছাড়া গতকালের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরো বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় এবং কুমিল্লা, যশোর, কুষ্টিয়া অঞ্চলসহ ঢাকা, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ পাতসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

তাপপ্রবাহের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সীতাকুণ্ড, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, শ্রীমঙ্গল অঞ্চলসহ ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। গত বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

‘যশ’ মোকাবেলায় প্রস্তুতি : এদিকে ঘূর্ণিঝড় যশ মোকাবেলায় সাতক্ষীরার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে জেলা প্রশাসন সম্মেলনকক্ষে ভার্চুয়ালি এ সভা হয়। জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সভায় জানানো হয়, জেলায় ১৪৫টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এক হাজার ৫০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ১৮৩ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদসহ দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা রয়েছে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.