ঐকমত্যের ভিত্তিতে জরুরি সমস্যার সমাধানে রাজি, ভারতকে চীন

পূর্ব লাদাখের বিদ্যমান পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হওয়ার ফলে ভারত-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর। দ্রুত তাঁর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন। সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সরকারের পরামর্শদাতা ওয়াং লি বলেছেন, জরুরি সমস্যাগুলি নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দু’পক্ষের গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছতে তাঁরা প্রস্তুত।

গত ১৫ জুলাই তাজিকিস্তানে সাংহাই কো-অপারেশনের বৈঠকের একফাঁকে আলোচনায় বসেন জয়শংকর ও ওয়াং লি। সেখানে জয়শংকর বলেন, নিয়ন্ত্রণরেখায় ক্রমবর্ধমান অশান্তি দুই দেশের সম্পর্কে খারাপ প্রভাব ফেলছে।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে পোস্ট করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সীমান্ত সমস্যাকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এমন পরিবেশের সৃষ্টি করা উচিত যাতে বিতর্কের সমাধান করা সহজ হয়।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের দাবি, ভারত-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সাধারণ মূল্যায়ন নিয়ে ওয়াং লি-র সঙ্গে একমত হয়েছেন জয়শংকর। নানা ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানো উচিত বলে উভয়েই মনে করেন।

ওয়াং লি আরো বলেছেন, উভয় পক্ষকে অবশ্যই বিবাদমান বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে হবে। উভয় পক্ষকে চুক্তি ও সাধারণ সমঝোতার বিষয়গুলো কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে এবং সংবেদনশীল ও একতরফাভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। যাতে ভুল বোঝাবুঝির মাধ্যমে কোনও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়।

তিনি বলেন, চীন-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে সীমান্ত-সংক্রান্ত ইস্যুতে অপ্রয়োজনীয় বাধা অপসারণে আমাদের দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে হবে।

এর আগে সামরিক পর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠকের পরেও সীমান্ত সমস্যার সমাধানে পৌঁছতে পারেনি ভারত ও চীন দুই দেশই। বরং সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে শান্তি বজায় রাখার যে আলোচনা হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে তা কর্যকর হয়নি। সীমান্তে উভয় দেশ সেনা সমাবেশ ঘটানোয় রীতিমতো যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল লাদাখ সীমান্তে।

পূর্ব লাদাখে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রথম নয়। আগেও বহুবার হয়েছে। কিন্তু সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে বৈঠকের পরে তার সমাধানও হয়েছে। কিন্তু গত বছরের ১৫ জুন গালওয়ানের মুখোমুখি সংঘাতের পরে সীমান্ত পরিস্থিতি চরমে ওঠে। দফায় দফায় বৈঠকেও শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। বরং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর উত্তেজনা আরো বেড়েছে।

সূত্র : এনডিটিভি।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.