ইভ্যালির রাসেল-শামীমার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর মামলা

ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা দায়ের হয়েছে। প্রতারণা, অর্থ আত্মসাত এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে মামলাটি করেছেন এক ব্যবসায়ী।

মামলায় ইভ্যালির সিইও মো. রাসেল ও তার স্ত্রী চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করেছেন কামরুল ইসলাম নামে পণ্য সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, ইভ্যালির ধানমন্ডি কার্যালয়ে তিনি ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের পণ্য সরবরাহ করেছেন। কিন্তু ইভ্যালি তার পাওনা টাকা পরিশোধ করেনি।

রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ধানমন্ডি থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অমৃতা জানান, ৪২০, ৪০৬, ৫০৬ ধারায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী গত শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বাদী হয়ে এই তিন ধারায় অভিযোগ তুলে মামলাটি দায়ের করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হুদা জানান, ইলেক্ট্রিক পণ্য সরবরাহ করলেও পেমেন্ট পাননি। পণ্য ডেলিভারি বাবদ পাওনা টাকা চাইলে তাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করার অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়। মামলাটি ধানমন্ডি থানা পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছে।

এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় একটি মামলা হয়। আরিফ বাকের নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর ওইদিন বিকেলেই রাসেলকে আটক করে র‍্যাব সদরদপ্তরে নিয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাদের গুলশান থানার মাধ্যমে আদালতে পাঠানো হয়।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে (প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান) ৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে যাত্রা শুরুর পর সাধারণ মানুষকে বাজারের চেয়ে কম দামে লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে টাকা নেওয়ার উদ্যোগ হিসেবে সাইক্লোন (পরবর্তী সময়ে টি-টেন নামকরণ) অফার দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের অভিযোগ ওঠে ইভ্যালির বিরুদ্ধে। সাত থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারির প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে আগাম টাকা নিলেও তাদের পণ্য সরবরাহ করেনি ইভ্যালি। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আগাম মূল্য পরিশোধ করা অনেক গ্রাহক এখনো পণ্য পায়নি। ইভ্যালি যেসব গ্রাহককে রিফান্ড চেক দিয়েছে, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় সেগুলোও বাউন্স হচ্ছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, শুধু ব্যবসায়ীদের কাছে ইভ্যালির বকেয়া ২০৫ কোটি টাকার ওপরে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ইভ্যালির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ জুলাই পর্যন্ত তাদের কাছে বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহকদের পাওনা রয়েছে ৫৪৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে দুই লাখ সাত হাজার ক্রেতা পাবে ৩১১ কোটি টাকা। আর পণ্য সরবরাহকারী মার্চেন্টরা পায় ২০৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া বাকি ২৬ কোটি টাকা পায় অন্য খাতের গ্রাহক। ইভ্যালির হিসাব অনুযায়ী, দায়ের বিপরীতে এর চলতি সম্পদ রয়েছে ৯০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আর সম্পত্তি, স্থাপনা ও যন্ত্রপাতি মিলিয়ে রয়েছে ১৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.