আরও এক কোটি পরিবারে কম দামে খাদ্য বিতরণ

আরও এক কোটি পরিবারে কম দামে খাদ্য বিতরণের উদ্যোগ
দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে ‘স্বল্পমূল্যে খাদ্য বিতরণ প্রকল্প’ টি জনপ্রিয় হয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে মূল্যস্ফীতির কথা চিন্তা করে সারা দেশে প্রান্তিক ও নির্দিষ্ট আয়ের আরও এককোটি পরিবারের মাঝে ভর্তুকি দামে খাদ্য বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, গত শুক্রবার রাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর এক কোটি পরিবারগুলোকে দুই মাসের মধ্যে কার্ড সরবরাহ করা হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ভর্তুকি দামে খাদ্য বিতরণের পাশাপাশি এই পরিবারগুলোকে নগদ আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হবে। এক কোটি মানুষকে ভর্তুকি দামে খাদ্য সহায়তা দিতে কত টাকার প্রয়োজন হবে তার একটি হিসাব করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, এক কোটি মানুষের জন্য ঈদের আগে ও পরে অনুরূপ কর্মসূচির জন্য সরকার প্রায় ১,২০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে।

এ কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি পরিবারকে এক লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি চিনি এবং দুই কেজি করে মসুর ডাল দেওয়া হবে। এছাড়াও অতি দরিদ্র ও নিঃস্ব পরিবারগুলোর মধ্যে পরিবার প্রতি ৫ কেজি চাল বিতরণ দীর্ঘ সময়ের জন্য অব্যাহত থাকবে।

এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, টিসিবির মাধ্যমে এক কোটি লোককে স্বল্পমূল্যে খাদ্য বিতরণ প্রকল্পটি প্রয়োজনীয় জিনিসের দামের ওপর একটি শক্তিশালী এবং ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এবং সরকার আশা করছে যে কর্মসূচিটি মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতেও সহায়তা করবে।

গত ৩ আগস্ট, বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির হার বেশ কয়েক মাস বৃদ্ধির পরে ৭.৪৮ শতাংশের সামান্য কমেছিল, এবং এটি খাদ্য মূল্যস্ফীতি হ্রাসে লক্ষ্য করা গেছে। এ সময় অর্থমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছিলেন মূল্যস্ফীতি আরো কমতে পারে। কিন্তু তার আগেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ফলে তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে অর্থনীতির প্রায় সবগুলো খাতে। বিশেষ করে পণ্য পরিবহনের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যেও দাম বেড়ে গেছে।

সামগ্রিকভাবে, টানা পাঁচ মাস মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির পর গত জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি ০.০৮ শতাংশ পয়েন্ট কমে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৮.১৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, জুন থেকে ০.১৮ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় সরকার ভোক্তা পর্যায়ে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এর ফলে পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন এবং কেরোসিনের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২.৫ শতাংশ বেড়ে প্রতি লিটার ৮০ টাকা থেকে ১১৪ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ৫১.১৬ শতাংশ বেড়ে ৮৬ টাকা থেকে লিটার প্রতি ১৩০ টাকা করা হয়েছে, অকটেনের দাম প্রতি লিটারে ৫১.৬৮ শতাংশ বেড়ে ৮৯ টাকা থেকে ১৩৫ টাকা হয়েছে।

নতুন প্রকল্প সম্পর্কে অর্থনীতিবিদ ও তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, জ্বালানি তেলের দাম দেশের অর্থনীতিতে বহুমাত্রিক প্রভাব ফেলে। অতএব, কম খরচে খাওয়ানোর জন্য নিম্ন-আয়ের লোকের সংখ্যা বাড়ানোর যেকোনও পরিকল্পনাই সুসংবাদ। বিশেষ করে নির্দিষ্ট আয়ের শহরবাসীদের জন্য। তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ধরনের কর্মসূচি তাদের কষ্ট কিছুটা লাাঘব হবে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.