অর্ধেকের বেশি জলাশয় শুকিয়ে আসছে

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিক থেকে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি বড় হ্রদ শুকিয়ে যাচ্ছে বা শুকিয়ে যাওয়ার মুখে। ফলে কৃষি, জলবিদ্যুৎ এবং মানুষের ব্যবহারের জন্য পানি নিয়ে উদ্বেগ তীব্রতর হচ্ছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় এমনটাই দেখা গেছে। সায়েন্স জার্নালে তারা গবেষণার এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এর কারণ উষ্ণায়ন তো আছেই তবে তার চেয়েও বড় বিষয় হলো একের পর এক জলাশয় ভরাট করে ফেলা।

আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল জানিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিঠা পানির উত্সগুলোর মধ্যে কয়েকটি ইউরোপ এবং এশিয়ার মধ্যবর্তী ক্যাস্পিয়ান সাগর থেকে দক্ষিণ আমেরিকার লেক টিটিকাকা পর্যন্ত ছিড়িয়ে রয়েছে। প্রায় তিন দশক ধরে প্রতি বছর প্রায় ২২ গিগাটনের ক্রমবর্ধমান হারে পানি হারিয়েছে এই মিঠা পানির উৎসগুলো। যা স্বাভাবিকের চেয়ে বহুগুণ দ্রুত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম লেক মিডের আয়তনের প্রায় ১৭ গুণ। কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূবিজ্ঞানের গবেষক ফ্যাংফ্যাং ইয়াও এই গবেষণা দলের প্রধান

এর একটি কারণ, মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ পানি তুলে নিচ্ছে। সেই পরিমাণ পানি নতুন করে জমছে না। দুই, বিশ্ব উষ্ণায়ন। জলবায়ু পরিবর্তনের একটি অন্যতম মাপকাঠি গড় তাপমাত্রার বৃদ্ধি। এর ফলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বদলে গেছে। আগে যেখানে যেমন বৃষ্টি হতো, এখন তা হচ্ছে না। এর ফলে স্বাভাবিক হ্রদগুলোর পলি আগে যেভাবে জমতো, এখন তা বদলে গেছে। হ্রদ এবং জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ার এটাও একটা কারণ।

বিশ্বের দুহাজার জলাশয় এবং হ্রদ পর্যবেক্ষণ করে এই প্রতিবেদন লেখা হয়েছে। ১৯৯২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এই হ্রদ এবং জলাশয়গুলির স্যাটেলাইট ছবি পরীক্ষা করা হয়েছে। বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখতে না পারলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরো হ্রদ এবং জলাশয় শুকিয়ে যাবে। একইসঙ্গে বদলাতে হবে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি।

সূত্র : ডয়চে ভেলে

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.