হাওরের আতঙ্ক বজ্রপাত, ১৬ দিনে ১০ জনের প্রাণহানি
কিশোরগঞ্জে চলতি বছরের এপ্রিলের শেষ ভাগ থেকে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মাত্র ১৬ দিনে বজ্রপাতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। হঠাৎ করে বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বজ্রপাতকে ঘিরে জনমনে বিরাজ করছে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশা স্থানীয়দের।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে কৃষক, শ্রমিক ও স্কুল শিক্ষার্থী রয়েছেন। বেশিরভাগ মৃত্যু ঘটেছে মাঠে কাজ করার সময় বা খোলা জায়গায় অবস্থান করার সময়। বজ্রপাতের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে জেলার হাওরাঞ্চলে। বজ্রপাতে বেশি প্রাণহানির শিকার কৃষক ও শ্রমিকরা। হাওরাঞ্চলের পরই বজ্রপাতে নিহতের বেশি ঘটনা ঘটেছে জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলায়। এই উপজেলায় সর্বশেষ বজ্রপাতে নবম শ্রেণির দুই স্কুল শিক্ষার্থী নিহত হয় ও একজন গুরুতর আহত হয়।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (৬ মে) কিশোরগঞ্জে পৃথক স্থানে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রী ও একজন কৃষক প্রাণ হারিয়েছেন। এর আগে বুধবার (৩০ এপ্রিল) জেলার ইটনা উপজেলার এলংজুরী ইউনিয়নের কাটটেংগুর হাওরে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মোহাম্মদ অনোহল (৪৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়। গত সোমবার (২৮ এপ্রিল) একদিনেই কিশোরগঞ্জ জেলায় বজ্রপাতে তিন কৃষক, এক কৃষানি ও এক জেলেসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়। সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল ৭টার দিকে জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙালিয়া ইউনিয়নের চরকাওনা মইশাকান্দা এলাকায় বজ্রপাতে আবু তাহের মিয়া (৫০) নামে এক বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়।
পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, বজ্রপাত থেকে বাঁচতে আমাদেরকে আরও বেশি সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ করে বজ্রপাতের সময় ঘরের মধ্যে অবস্থান করুন এবং দরজা-জানালা বন্ধ রাখুন। খোলা জায়গা, উঁচু গাছ বা বিদ্যুৎ পরিবাহী বস্তু থেকে দূরে থাকুন। বজ্রপাত শুরু হলে সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ আশ্রয়ে যান এবং বিদ্যুৎচালিত যন্ত্রপাতি ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ জানায়, বজ্রপাতের ঝুঁকি এড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মাঠে কাজ করার সময় সাবধানতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে। বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা এড়িয়ে ঘরের ভেতরে অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
-কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
Comments are closed.