শেষ মুহূর্তেও ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর আমচাষিরা
উত্তরের জেলা নওগাঁয় গেল কয়েক বছরে বেড়েছে আমের চাষ। বর্তমানে এ জেলা সারা দেশের মানুষের কাছে আমের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। শুরু হয়েছে আমের মৌসুম। ইতোমধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে গোপালভোগ, হিমসাগর এবং স্থানীয় গুটি জাতের আম। তবে এ জেলার ৬৫ শতাংশ আম বাগান আম্রপালি জাতের।
জেলার সবচেয়ে বেশি আম চাষ হয় সাপাহার পোরশা, পত্নীতলা এবং নিয়ামতপুর উপজেলায়। সম্প্রতি সাপাহার, পোরশা এবং পত্নীতলার আম বাগানগুলো ঘুরে দেখা যায়, শেষ মুহূর্তের পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় পার করছেন আম চাষিরা। পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষার জন্য কেউ বাগানে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। আবার কেউ দীর্ঘদিন আমকে টিকিয়ে রাখার জন্য এবং বেশি মুনাফার আশায় ফ্রুট ব্যাগিংয়ে মুড়িয়ে রাখছেন। তবে মুকুলকালীন সময়ে তীব্র তাপদাহ এবং উকুন পোকার আক্রমণের কারণে এ বছর আমের ফলন কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন জেলার আম চাষিরা। আমের উৎপাদন কম হওয়ায় গত বছরের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি হবে বলে আশা আম চাষিদের।
জেলার পোরশা উপজেলার গাঙ্গুরিয়া ইউনিয়নের আমইড় গ্রামের আমচাষি মতিউর রহমান বলেন, মুকুল থাকাকালীন তীব্র তাপদাহ এবং উকুন পোকার আক্রমণের কারণে অধিকাংশ মুকুল নষ্ট হয়ে গেছে। যার কারণে এ বছর আমের ফলন তুলনামূলক কম। নিজস্ব ১ বিঘা জমিতে আম চাষে সার, কীটনাশক, শ্রমিক এবং আনুষাঙ্গিক খরচসহ প্রায় ২২-২৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। গত বছর ৩০০০-৩৫০০ টাকা মণ দরে আম বিক্রি করেছি। যেহেতু বাগানে এ বছর আমের পরিমাণ কম। তাই গত বছরের তুলনায় দাম বেশি হলে কিছুটা লাভবান হতে পারবো। তাছাড়া খরচ উঠানোই কষ্টকর হয়ে যাবে। আম মোটামুটি পরিপক্ব হয়ে গেছে। আর ৭-৮ দিন পরেই গাছে পাকা দেখা দিতে পারে। শেষ মুহূর্তে মাছির আক্রমণ বেড়ে যায়। মাছির আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য বাগানে এখন কীটনাশক প্রয়োগ করছি।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেই। ফলে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া আমচাষের অনুকূলে রয়েছে। আমের ফলন এবং সাইজ তুলনামূলক ভালো হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশা করি জেলায় এ বছর প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার আম বাণিজ্য হতে পারে।
Comments are closed.