`রূপালী পর্দার নবাব’ হাসপাতালে

ঢাকাই সিনেমার নবাব তিনি। অভিনয় ক্যারিয়ারে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমা। নায়ক হিসেবেও যেমন ভক্তদের নয়নমণি ছিল একইভাবে বাবা চরিত্রেও রেখেছেন দুর্দান্ত ভূমিকা। বলছি প্রখ্যাত কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্রের কথা। দীর্ঘদিন ধরেই অভিনেতা রয়েছেন পর্দার বাইরে। অনেক অসুস্থ প্রবীর মিত্র, শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে দিনকে দিন। বর্তমানে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

অভিনেতার অসুস্থতার বিষয়ে কথা বলেছেন তার ছেলে মিথুন মিত্র। মিথুন জানান, ‘বাবা ভালো নেই। গত ২২ ডিসেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শরীরে অক্সিজেন পাচ্ছিল না। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার ফুসফুসের সমস্যা ধরা পড়েছে। বর্তমানে অক্সিজেনের সঙ্গে ইন্টারনাল ব্লিডিং হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্লাটিলেটও কমে গেছে।

মিথুন বলেন, শারীরিক অবস্থার তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খারাপের দিকে যাচ্ছে। তবে চিকিৎসকরা তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

জনপ্রিয় এই অভিনেতার রূপালী পর্দায় অভিষেক ঘটে ১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ দিয়ে। এরপর ১৯৮২ সালে ‘তিনি বড় ভাল লোক ছিল’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৮ সালে আজীবন সম্মাননা বিভাগে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা হয়।

প্রবীর মিত্র চাঁদপুর শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। বংশপরম্পরায় পুরনো ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা তিনি। তার পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। তিনি প্রথম জীবনে সেন্ট গ্রেগরি থেকে পোগজ স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। প্রবীর মিত্রের স্ত্রী অজন্তা মিত্র ২০০০ সালে মারা গেছেন। তার এক মেয়ে তিন ছেলে। ছোট ছেলে ২০১২ সালে ৭ই মে মারা গেছেন।

‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয় পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’সহ চার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

অভিনয়ের সঙ্গে খেলাধুলাতেও সাক্ষর রেখেছেন তিনি। ষাটের দশকে ঢাকা ফার্স্ট ডিভিশন ক্রিকেটে ক্যাপ্টেন হিসেবে খেলেছেন প্রবীর মিত্র। একই সময় তিনি ফায়ার সার্ভিসের হয়ে ফার্স্ট ডিভিশন হকি খেলেছেন। এছাড়া কামাল স্পোর্টিংয়ের হয়ে সেকেন্ড ডিভিশন ফুটবলও খেলেছেন এই অভিনেতা।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.