ভয়েস অব আমেরিকায় ৬৩৯ কর্মীকে ছাঁটাই
আন্তর্জাতিক সম্প্রচার মাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা ও এর মূল প্রতিষ্ঠানের ৬৩৯ কর্মীকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ব্যয়ে কাঁটছাটের কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
ব্রিটিশ গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, শুক্রবার ট্রাম্প নেতৃত্বাধীন সরকার ছাঁটাইয়ের এ ঘোষণা দেয়। গত মার্চ থেকে এ পর্যন্ত সম্প্রচার মাধ্যম ও এর মূল প্রতিষ্ঠানের এক হাজার ৪০০ কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে।
১৯৪২ সালে নাৎসি প্রোপ্রাগাণ্ডা ঠেকাতে ভয়েস অব আমেরিকা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ওই সময় সম্প্রচার মাধ্যমটির প্রতিপাদ্য ছিল, ‘ইউ ব্রিং ইউর ভয়েস ফ্রম আমেরিকা’।
ভয়েস অব আমেরিকার মূল প্রতিষ্ঠান ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়া (ইউএসএজিএম)। সবশেষ ছাঁটাইয়ের পর প্রতিষ্ঠানটিতে মাত্র ২৫০ জন কর্মী অবশিষ্ট থাকবে। সারাবিশ্বে গণতন্ত্রের মান বজায় রাখতে সম্প্রচার মাধ্যমটি কাজ করে আসছে।
শুক্রবার ছাঁটাইয়ের কথা জানিয়ে ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা কারি লেক বলেন, ‘কয়েক দশক ধরে আমেরিকান করদাতাদের এমন একটি সংস্থাকে অর্থায়ন করতে বাধ্য করা হচ্ছে যা অকার্যকর। এখন সময় এটি শেষ করার।’
ডজনখানেক ভাষায় প্রকাশিত ভয়েস অব আমেরিকা প্রতি সপ্তাহে ৩৬০ মিলিয়ন লোকের কাছে পৌঁছায় বলে ২০১৯ সালে কংগ্রেসে বলেছিলেন ইউএসএজিএমের তৎকালীন সিইও জন লাসিং। গত মার্চে হোয়াইট হাউজ সম্প্রচার মাধ্যমটি নিয়ে একটি বিবৃতিতে দেয়। এতে ভয়েস অব আমেরিকা প্রোপ্রাগান্ডা চালানোয় অভিযুক্ত করা হয়। পাশাপাশি সম্প্রচার মাধ্যমটি বামপন্থিদের কথা বলে দাবি করা হয়। ওই বিবৃতিতে ভয়েস অব আমেরিকাকে ‘দ্য ভয়েস অব র্যাডিকাল আমেরিকা’ আখ্যা দেওয়া হয়।
গার্ডিয়ান বলছে, স্নায়ু যুদ্ধের সময় সম্প্রচার মাধ্যমকে জনসাধারণের কাছে পৌঁছানোর বাহন হিসেবে ধরতো যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাঁটাই আমেরিকার কৌশল থেকে নিজেদের সরে আসার বড় প্রতীক।
গত বৃহস্পতিবার ভয়েস অব আমেরিকায় কাজ করা ফার্সি ভাষার সাংবাদিকদের ইসরাইল-ইরান সংঘাত কভারেজ করার কথা বলে। এর পরের দিনই ট্রাম্প প্রশাসন থেকে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা এলো।
ট্রাম্প প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালাবে ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিকরা। এতে নেতৃত্ব দেবেন সাংবাদিক প্যাটসি উইদাকুসওয়ারা, জেসিকা জেরিয়াট ও কেট নিপার। এক বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত ৮৩ বছরের স্বাধীনচেতা সাংবাদিকতাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এর মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র ও মার্কিন আদর্শের বিচ্যুতি ঘটবে।’
Comments are closed.