বন্ধ হচ্ছে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ?

হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন প্রাইভেসি পলিসি ও শর্ত চালু নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক চলছে। অনেকের কাছে বিষয়টি নিয়ে অস্পষ্টতাও রয়েছে। এই নীতিমালার বিরুদ্ধে জনস্বার্থে ভারতের দিল্লির হাইকোর্টে মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছিল বিষয়টি নিয়ে। কোটি কোটি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারী অন্য প্ল্যাটফর্মের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছিলেন। একারণে হোয়াটসঅ্যাপের বিকল্প বেশ কিছু অ্যাপস দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

আসলে কী ছিল এই নীতিমালায় যে ব্যবহারকারীরা ফুঁসে উঠেছিলেন। নীতিমালায় হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার চালিয়ে যেতে ফেসবুকের সঙ্গে তথ্য শেয়ার করে নিতে সম্মত হতে হবে ব্যবহারকারীদের। একটি পপ-আপ নোটিশ দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে বলেছিল, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার চালিয়ে যেতে এই শর্ত হালনাগাদ করতে হবে, তা না হলে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিতে হবে। এতে বলা হয়েছিল, হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো মেসেজ ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপের সঙ্গে জুড়ে থাকা অন্য কয়েকটি অ্যাপ বা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মও জেনে যাবে। শুধু তাই নয়, ব্যবহারকারীর নম্বর, ফোনে থাকা যাবতীয় যোগাযোগ নম্বর এবং প্রোফাইল নামও জেনে নেবে ফেসবুক।

কিন্তু সবই কি সত্য! না। তখন এক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার সাক্ষাৎকারে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, নতুন প্রাইভেসি পলিসি শুধু বিজনেস অ্যাকাউন্টের জন্যই প্রযোজ্য হবে। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবসহ প্রিয়জনদের সঙ্গে শেয়ার করা ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখা হবে। এতে গ্রাহকের চ্যাটের ক্ষেত্রে তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যাবে না।

১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মে পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে অনেকেই নতুন এই নীতিমালায় সম্মতি দেননি। কী হতে যাচ্ছে তাদের অ্যাকাউন্টের! আসলে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন এই পলিসি গ্রহণ না করলে বা কী হবে?

১৫ মে থেকে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন এই গোপনীয়তা নীতি কার্যকর হয়েছে। যদিও সংস্থাটি ১৫ মের পর ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেছিল, সেই সময়সীমা বাতিল করেছে। তার মানে এই নয় যে, যারা নতুন নীতিমালা গ্রহণ করবেন না, তাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ হবে না।

হোয়াটসঅ্যাপ দিল্লি হাইকোর্টকে জানিয়েছে, ব্যবহারকারীরা যদি গোপনীয়তা নীতিতে রাজি না হন, তাহলে সংস্থাটি তাদের অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দেবে না। তবে ধীরে ধীরে বিভিন্ন সেবা ব্যবহারের সুযোগ সীমিত করা হবে। নতুন এই নীতিমালায় সম্মতি না জানালেও কোনো অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলা হবে না এবং কার্যকারিতাও বন্ধ হবে না বরং অনেক সুবিধাই পাবেন ব্যবহারকারীরা। এই পলিসি গ্রহণের জন্য বারবার ব্যবহারকারীকে মনে করিয়ে দেওয়া হবে।

তবে কতদিন এই সতর্ক বাণী দেবে, তা নির্দিষ্ট করে জানায়নি সংস্থাটি। বারবার মনে করিয়ে দেওয়ার পরও ব্যবহারকারীরা এই নীতিমালায় সম্মতি দিতে ব্যর্থ হলে তাদের চ্যাটলিস্ট বন্ধ করে দেওয়া হবে। এমনকি তারা পরে আর সেই লিস্টে প্রবেশ করতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে স্বস্তির বিষয় হলো, চ্যাটলিস্ট বন্ধ হলেও অডিও-ভিডিও কল চালিয়ে যেতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। এভাবে কয়েক সপ্তাহ পার হলে আর কোনো ধরনের নোটিফিকেশন বা বার্তা পাবেন না ব্যবহারকারীরা। এ সময় কোনো কলও রিসিভ করা যাবে না। এক সময় ব্যবহারকারীর মেসেজ এবং কল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.