পাক-ভারত বাকযুদ্ধ কি পরমাণু যুদ্ধে রূপ নেবে?

যে কোনো মুহূর্তে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হতে পারে এমনটাই আশঙ্কা করছেন রাজনীতি এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে অতি সম্প্রতি দুই দেশের দায়িত্বশীল অতি উচ্চ পর্যায়ের হুংকারে এমনটা ভাবা একেবারে অমূলকও নয়।

কাশ্মীরের স্বশাসনের অধিকার বাতিলের পর দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। এরইমধ্যে বেশ কয়েক দফা ছোটোখাটো অগুণিত সংঘর্ষে জরিয়েছে উভয় দেশের সেনারা। তবে সেটি কখনো পূর্নাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নেয়নি।

ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিশান রেড্ডি গত মাসে লোক সভায় জানিয়েছেন, শুধু আগস্ট থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যেই লাইন অব কন্ট্রোলে ৯৫০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করা হয়েছে।

অন্যদিকে গত সেপ্টেম্বর মাসে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের চলমান পরিস্থিতির কারণে যেকোনো মুহূর্তে ‘আকস্মিক যুদ্ধ’র দিকে মোড় নিতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। অস্থিতিশীল এই অঞ্চল সফর করার জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মিশেল বাচেলেতের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছিলেন তিনি। সে সময় কুরেশি ভারতকে সতর্ক করে বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে, ভারত এবং পাকিস্তান উভয় দেশই সংঘাতের পরিণতি সম্পর্কে জানে।

চলমান উত্তেজনার মাঝে নতুন করে আবার আগুনে ঘি ঢালেন ভারতের সেনাবাহিনীর প্রধান বিপিন রাওয়াত। গতকাল বিপিন বলেন, যে কোনো মুহূর্তে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হতে পারে। লাইন অব কন্ট্রোলে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙ্গে যে কোনো সময় যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে এবং এ জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

পাকিস্তানইবা কেন পিছিয়ে থাকবে! ভারত যদি কোনো প্রকার আগ্রাসন চালায় তবে তার সমুচিত জবাব দেবে বলে আজ জানিয়েছে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী।

দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ ঘাফুর আজ এক বিবৃতিতে বলেন, এলওসি সংলগ্ন অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কায় ভারতীয় সেনাপ্রধানের উস্কানিমূলক বক্তব্য ভারতজুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভ থেকে বিশ্ববাসীর নজর সরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে ভারতজুড়ে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তীব্র অস্থিরতা বিরাজ করছে।

ব্রিটিশদের অধীনে একসময় একত্রে থাকা দুটি দেশ ১৯৪৭ সালে পৃথক হবার পর থেকে যুদ্ধ যেন লেগেই আছে। সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ নিকট প্রতিবেশী দুই দেশের কাছেই রয়েছে পারমাণবিক বোমা। এ অবস্থায় কখনো বড় ধরনের যুদ্ধ বাঁধলে এবং সেক্ষত্রে কেউ তা ব্যবহার করলে তার বিরূপ প্রভাব পড়বে গোটা উপমহাদেশে। তা থেকে বেঁধে যেতে পারে এমনকি বিশ্বযুদ্ধও।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.