ধামরাইয়ে মা’সহ দুই সন্তানের মরদেহ উদ্ধার

ঢাকার ধামরাইয়ে একই পরিবারের তিন সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (২ জুন) বিকেল ৩টার দিকে ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের রক্ষিত গ্রামে নিজ বাড়ির কক্ষ থেকে এক মা ও তার দুই ছেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন- রক্ষিত গ্রামের মৃত রাজা মিয়ার স্ত্রী নার্গিস আক্তার (৪৫), বড় ছেলে মো. শামীম (১৮) ও ছোট ছেলে মো. সোলাইমান (৭)।

 

জানা গেছে, বছর খানেক আগে নার্গিসের স্বামী রাজা মিয়া স্ট্রোক করে মারা যান। এরপর থেকে তিনি তার দুই ছেলেকে নিয়ে নিজ বাড়িতে বসবাস করছিলেন। বিয়ের সুবাদে তাদের বড় মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন।

সোমবার (২ জুন) সকালে মা নার্গিসের মোবাইল ফোনে বহুবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া না পেয়ে, তার মেয়ে নিজ বাড়িতে চলে আসেন। কক্ষের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ দেখে, দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে বিছানার ওপর তিনজনের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। পরে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং মরদেহগুলো উদ্ধার করে।

এ সময় কক্ষের ভেতর থেকে ভাত ও ডিম ভাজিসহ কিছু খাবার উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, খাবারের সঙ্গে বিষজাতীয় কিছু মিশিয়ে তিনজন একসঙ্গে আত্মহত্যা করেছেন। তবে ময়নাতদন্তের আগে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এ ব্যাপারে রাজা মিয়ার মেয়ে নাসরিন আক্তার বলেন, আমার মা ও দুই ভাই স্বাভাবিকভাবে মারা যায়নি। কেউ না কেউ তাদের কৌশলে হত্যা করেছে। কেবল আমার শরিকদের সঙ্গেই জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। যে বিরোধের কারণে আমার বাবা বছরখানেক আগে মৃত্যুবরণ করেছেন। আর একইভাবে বছর না ঘুরতেই আমার মা ও দুই ভাইয়ের জীবন গেল। আমি তদন্তসাপেক্ষে এ হত্যাকাণ্ডের কঠোর বিচার ও হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দাবি করছি।

স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর রহমান জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর নার্গিস আক্তার পারিবারিক ডেকোরেটরের ব্যবসা কিছুদিন চালালেও অভাবের কারণে তা বিক্রি করে দেন। এরপর থেকেই পরিবারটি অভাব-অনটনের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিল।

তিনি আরও বলেন, তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। শত্রুতা নিয়েও কেউ কিছু বলতে পারছে না।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘরের ভেতর একই সঙ্গে তিনজনের মৃত্যুবরণ সত্যিই রহস্যজনক। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ছাড়া এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছুই বলা সম্ভব নয়।

You might also like

Comments are closed.