ডলার সংকট: বিদেশি মুদ্রার সুদহারের সীমা তুলে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ডলারের সরবরাহ বাড়াতে দেশের ব্যাংকগুলোয় প্রবাসী, বিদেশে থাকা বাংলাদেশি নাগরিক ও বিদেশি কম্পানির খোলা বৈদেশিক মুদ্রা আমানত অ্যাকাউন্টের সুদহারের সীমা তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রবিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। ফলে এখন থেকে বিদেশি মুদ্রায় আমানত সংগ্রহে ব্যাংকগুলো নিজেরাই সুদহার নির্ধারণ করতে পারবে।

নতুন এই সিদ্ধান্তের আগে এনএফসিডি (নন-রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট) নীতিমালা অনুযায়ী, এনএফসিডি আমানতের সুদহার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইউরো মুদ্রার স্বীকৃত সুদহারের বেশি দিতে পারত না দেশি কোনো ব্যাংক। সাধারণত এই সুদহার ১ থেকে দেড় শতাংশে ওঠানামা করে।

বেশি সুদ দিয়ে হলেও ডলার সংগ্রহের জন্য রবিবার সার্কুলারের মাধ্যমে এ সীমা তুলে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রবাসী বাংলাদেশি, বিদেশে বসবাসরত দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা বাংলাদেশি, বিদেশে নিবন্ধিত বিদেশি কম্পানির কাছ থেকে এনএফসিডি অ্যাকাউন্টে বিদেশি মুদ্রায় আমানত সংগ্রহ করতে পারে ব্যাংক।

নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাংকগুলো এখন বেশি সুদহার দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় আমানত সংগ্রহ করতে পারবে। এতে ব্যাংকগুলোতে ডলারের সরবরাহ বাড়বে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ নির্দেশনা বিদেশি নাগরিক, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও শতভাগ বিদেশি মালিকানার শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নেওয়া এনএফসিডি অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।

দেশের ব্যাংকগুলো ১, ৩, ৬ ও ১২ মাস মেয়াদে বিদেশি মুদ্রায় এনএফসিডি হিসাবে মেয়াদি আমানত সংগ্রহ করতে পারে। এনএফসিডি হিসাব পরিচালনা করতে হলে প্রবাসী ও বিদেশে বসবাসরত ব্যক্তিদের বেলায় ন্যূনতম এক হাজার ডলার সমপরিমাণের বিদেশি মুদ্রা ও অন্যদের বেলায় ২৫ হাজার ডলার জমা রাখতে হয়। বিদেশি মিশনে কর্মরত বা প্রেষণে যাওয়া কর্মকর্তারাও এ ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করতে পারেন।

খোলাবাজারে আরো দাম বাড়ল

এদিকে খোলাবাজারে ডলারের দাম আরো বেড়েছে। গতকাল রবিবার দুপুরে এক ডলার কিনতে ১০০ টাকা ২০ পয়সা থেকে ১০০ টাকা ৫০ পয়সা লেগেছে। এর আগে গত ১৭ মে খোলাবাজারে ১০০ টাকা ছাড়িয়েছিল ডলারের দর। ১০৪ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছিল।

ব্যবসায়ীরা জানান, খোলাবাজারে ডলারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সে কারণে ডলারের দাম ফের ১০০ টাকার ওপরে উঠেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা ডলার পাচ্ছি না। আজ আমি এক ডলারও কিনতে পারিনি। আগে কিছু ডলার কেনা ছিল, সেগুলোই বিক্রি করেছি। ’

খোলাবাজারের পাশাপাশি ব্যাংকেও ডলারের দর বাড়ছে। গত এক বছরে আন্ত ব্যাংকে প্রতি ডলারে ৯ টাকা ১৫ পয়সা দর বেড়ে এখন ৯৩ টাকা ৯৫ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে দর ১০০ টাকা ছুঁইছুঁই করছে। ব্যাংকগুলো নগদ ডলারও বেশি দামে বিক্রি করছে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.