ক্লিওপেট্রার চরিত্রে অভিনয় করতে চাই

একান্ত সাক্ষাৎকারে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা

বাংলাদেশ এবং ভারতের বাংলা মুভির তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। নব্বই দশক থেকে বাংলাদেশের মুভিতে কাজ করছেন। অভিনয় করেছেন হিন্দি মুভিতেও। বাণিজ্যিক এবং শৈল্পিক, উভয় ধারার সিনেমাতে সাবলীল অভিনয় তাকে এনে দিয়েছে ব্যাপক তারকাখ্যাতি। পেয়েছেন ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

অভিনয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত ঋতুপর্ণা। মাল্টিনিউজটোয়েন্টিফোর.কম বার্তা সম্পাদক তারিক চয়ন এর সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেছেন তার ব্যক্তিগত জীবনের নানা অজানা কথাও…

প্রশ্নঃ দর্শক আপনাকে এতো ভালোবাসে কেন?
উত্তরঃ আমি সৎ এবং পরিশ্রমী, কখনো তাদের সঙ্গে প্রতারণা করিনি। তাই হয়তো এতোটা ভালোবাসে।

প্রশ্নঃ একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে আপনার শক্তিশালী দিক কোনটি?
উত্তরঃ আমি কখনো হাল ছেড়ে দেই না। সবসময় নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করি।

প্রশ্নঃ সবাই বলে আপনি খুব সুন্দর করে কথা বলেন। এর রহস্যটা কি?
উত্তরঃ এটা আসলে সহজাত। আমি মন খুলে কথা বলি এবং নিজস্ব স্টাইল অনুসরণ করি। এই যা।

প্রশ্নঃ অভিনয়শিল্পী হিসেবে নিজের কোন দিকটি নিয়ে কাজ করতে চান?
উত্তরঃ আমি ভালো বাইক বা স্কুটি চালাতে জানি না। এ নিয়ে কাজ করতে হবে।

প্রশ্নঃ শিল্পীর সামাজিক দায়বদ্ধতা বলতে আপনি কি বোঝেন?
উত্তরঃ অনেক। শিল্পীরা সমাজে উদাহরণ তৈরি করতে পারে। মানুষ আমাদের আইডল মনে করে। ভালোবাসার জায়গাটাই মূলকথা। আমাদের মানুষকে ভালোবাসতে শিখতে হবে, বিশেষ করে আমরা যাদের কাছে প্রয়োজনীয়। পারলে তাদের জন্য সুযোগ তৈরি করতে হবে।

প্রশ্নঃ একথা অনেক তারকাই বলেন। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায় না। আপনি নিজে কোন সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত?
উত্তরঃ আমি মনে করি শুধু তারকাই নয়, সমাজের প্রত্যেক সচেতন নাগরিকেরই তা নৈতিক দায়িত্ব। আমি এমন অনেক সংস্থার সাথে জড়িত। এছাড়াও আশেপাশের দুর্দশাগ্রস্ত সবার পাশেই দাঁড়াবার চেষ্টা করি সবসময়।

প্রশ্নঃ তারকাদের জনপ্রিয়তা কাজে লাগাবার কথা তাহলে বলছেন…
উত্তরঃ অবশ্যই! জনপ্রিয়তা, খ্যাতি এগুলো ঈশ্বরের উপহার এবং আশীর্বাদ। সবাই এসব পায় না। আমাদের এগুলো যত্ন করে কাজে লাগানো উচিত, অপচয় নয়।

প্রশ্নঃ তারকা হওয়ার ভোগান্তিওতো আছে…
উত্তরঃ হ্যাঁ। তাতো আছেই।

প্রশ্নঃ ‘দহন’ ছবিতে আপনি বখাটেদের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। বাস্তবে এমন কিছু হয়েছে?
উত্তরঃ হরহামেশাই হয়। সবসময় ইভটিজিং এর শিকার হচ্ছি। নারীরা প্রতি মুহূর্তেই এসবের শিকার হচ্ছে।

প্রশ্নঃ সেটা তারকা হওয়ার আগে না পরে?
উত্তরঃ সবসময়। এর সঙ্গে তারকাখ্যাতির সম্পর্ক নেই।

প্রশ্নঃ ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। এমন কোনো চরিত্র আছে যাতে অভিনয় করতে না পারাটা অপূর্ণতা মনে হয়?
উত্তরঃ হ্যাঁ, ক্লিওপেট্রার চরিত্র।

প্রশ্নঃ একাকী সময় কীভাবে কাটে?
উত্তরঃ একাকী আমি চুপ মেরে থাকি। নানান বিষয় নিয়ে ভাবি, প্রকৃতির কাছে নিজেকে বিলিয়ে দেই। লেখালেখি করি, গুনগুন করে প্রিয় গানগুলো গাইতে থাকি।

প্রশ্নঃ টিভি দেখেন?
উত্তরঃ টিভি খুব একটা দেখা হয় না।

প্রশ্নঃ ঢালিউডের অনেক মুভিতে আপনি অভিনয় করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প অনেকটা বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আপনি কি বলবেন?
উত্তরঃ আমি আশাবাদী মানুষ। সব ক্ষেত্রেই উত্থান-পতন রয়েছে। আমার মনে হয়, অদূর ভবিষ্যতে সমস্যাগুলো ঠিক হয়ে যাবে।

প্রশ্নঃ কেমন মানুষ আপনাকে অনুপ্রাণিত করে?
উত্তরঃ সম্পর্কের গুরুত্ব বুঝা এবং সম্পর্ককে সম্মান জানানো মানুষদের দ্বারা আমি অনুপ্রাণিত হই।

প্রশ্নঃ নতুন অভিনয়শিল্পীদের জন্য সিনিয়র শিল্পী হিসেবে আপনার পরামর্শ…
উত্তরঃ কখনো যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে যেও না, ধৈর্য ধরো, ব্যর্থতাকে বরণ করতে শেখো। তাহলেই সফলতার স্বাদ পাবে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.