করোনা প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল উহান সফরে চীনা প্রেসিডেন্ট

নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল উহান পরিদর্শনে গেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। আজ মঙ্গলবার সকালে তিনি উহান পৌঁছান। চীনের হুবেই প্রদেশের এ রাজধানী শহরে গত ডিসেম্বর প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে শহরটি বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। চীনের মূল ভূখণ্ডে আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ার পর প্রথমবার শহরটি পরিদর্শনে গেলেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গতকাল সোমবার গোটা চীনে মাত্র ১৯ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন।

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯ জনে। যেখানে চীনের মূলভূখণ্ডেই মারা গেছে ৩ হাজার ১৩৬ জন। চীনের ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব ক্রমেই কমে এলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১০৫টি দেশে কভিড ১৯ ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের বাইরে ইতালিতে সবচেয়ে বেশি মানুষের প্রাণ নিয়েছে এ ভাইরাস।

প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং উহানে পৌঁছে প্রথমেই যান সেনাবাহিনী পরিচালিত হাউশেনশান হাসপাতালে। কভিড ১৯ ছড়িয়ে পড়ার পর কয়েক দিনের মধ্যে যে দুটি হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছিল এটি তার মধ্যে একটি। এখানে প্রেসিডেন্ট অবকাঠামো ও কার্যক্রম পরিদর্শন করে। পাশাপাশি ভর্তি থাকা রোগী, চিকিৎসা কর্মীদের নিরাপত্তা এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, শি চিকিৎসক, নার্স এবং রোগীদের আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে উৎসাহিত করেন।

এর আগে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র পিপলস ডেইলি জানিয়েছে, হুবেই প্রদেশের রাজধানী শহরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও নিয়ন্ত্রণের কাজ পরিদর্শন করবেন প্রেসিডেন্ট। এছাড়া তিনি চিকিৎসাকর্মী, সামরিক কমান্ডার, কমিউনিটি কর্মী, জননিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করবেন। ভাইরাস প্রতিরোধে তৃণমূল থেকে শুরু করে সামনে থেকে যারা কাজ করছেন তাদের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী, রোগী এবং স্থানীয় বাসিন্দাদেরও খোঁজখবর নেবেন প্রেসিডেন্ট শি।

স্থানীয় পার্টি প্রধান ইং ইয়াং গতকাল সোমবার একটি প্রাদেশিক করোনভাইরাস কনটেইনমেন্ট স্ট্র্যাটেজির বৈঠকে বলেছেন, হুবেই কর্মকর্তাদের স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরে আসার জন্য প্রস্তুতি নেয়া উচিত।

চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, গতকাল সোমবার পর্যন্ত চীনের মূলভূখণ্ডে আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ১৯ জন। এর মধ্যে অবশ্য ১৭ জনই উহান শহরের বাসিন্দা। বাকি দুইজন বেইজিং এবং পূর্ব গুয়াংডং প্রদেশের। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ৭৫৪ জন।

এদিকে গত সোমবার উহানের জিয়াংগানে আন্তর্জাতিক এক্সিবিশন সেন্টারে স্থাপিত অস্থায়ী হাসপাতালটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে করোনাভাইরাস বিস্তারের কেন্দ্র এ শহরে মোট ১৪টি অস্থায়ী হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়া হলো। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য এক্সিবিশন সেন্টার ও জিমনেশিয়ামসহ বেশ কয়েকটি সরকারি অবকাঠামোতে মোট ১৬টি অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছিল। বর্তমানে অধিকাংশ রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা ও আক্রান্তের সংখ্যা একেবারে কমে যাওয়ায় বর্তমানে মাত্র দুটি অস্থায়ী হাসপাতাল চালু রয়েছে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.