ইসলামে আমানতের গুরুত্ব, খিয়ানতের ভয়াবহতা

আমানত আরবি শব্দ। আমনত এর শাব্দিক অর্থ বিশ্বস্ততা, আস্থা, নিরাপত্তা বা নিরাপদে রাখা ইত্যাদি।

ইসলামে আমানতের খিয়ানত করা কবিরা গুনাহ। ইসলামে আমানতের গুরুত্ব অত্যধিক। আমানতের খিয়ানত করা মুনাফিকের পরিচায়ক, আর আমানত রক্ষা করা ঈমানদারের পরিচায়ক। বলা হয় মুমিনের কাছে সর্বাপেক্ষা উত্তম সম্পদ হলো আমানতদারিতা।

চলুন জেনে নেয়া যাক, ইসলামে আমানতের গুরুত্ব এবং এর খিয়ানতের ভয়াবহতা বিষয়ে কি বলেঃ

সূরা আন নিসায় বলা হয়েছে- আল্লাহর বাণী ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা যেন প্রাপ্য আমানতসমূহ তার প্রাপকদের কাছে পৌঁছে দাও।

সূরা আনফাল এ বলা হয়- হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও তোমাদের ওপর ন্যস্ত আমানতের খিয়ানত করো না। অথচ তোমরা এর গুরুত্ব জানো।

সূরা আল মুমিনুন এ বলা হয়- (আমানতদারিতাকে আল্লাহতায়ালা মুমিনের অন্যতম গুণ হিসেবে বর্ণনা করে) এরা সেই লোক যারা আমানতের প্রতি লক্ষ্য রাখে এবং স্বীয় অঙ্গীকার হেফাজত করে।

সুনানে আবু দাউদ, হাকেম অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ সা: বলেন- মহান আল্লাহ ঘোষণা করেছেন যখন দুই পক্ষ মিলে যৌথ কোনো কাজ করে, আমি তখন তাদের (সঙ্গে) তৃতীয় পক্ষ হই। যে পর্যন্ত তারা পরস্পরের সঙ্গে খিয়ানত তথা ওয়াদা ভঙ্গ না করে।

মুসনাদে আহমদ অনুযায়ী রাসূল সা: বলেন- মুমিনের মধ্যে আর যত দোষই থাক, খিয়ানত তথা বিশ্বাসঘাতকতা ও মিথ্যাচার থাকতে পারে না।

আবু দাউদ ও তিরমিজ অনুযায়ী হজরত আবু হুরায়রা রা: বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন- তোমরা খিয়ানত করো না, কেননা খিয়ানত কতই না শাস্তি ও তিরস্কারযোগ্য অপরাধ।

আল মুসতাদরাক লিল হাকিম অনুযায়ী মহানবী সা: বলেন- তোমার সাথে চারটি জিনিস থাকলে পৃথিবীর সব হারিয়ে ফেললেও তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না ১. আমানতের সংরক্ষণ; ২. সত্যবাদিতা; ৩. উত্তম চরিত্র ও ৪. পবিত্র রিজিক।

অন্য অন্য হাদিসে এসেছে- রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন- মুনাফেকের আলামত ৩টি- যখন সে কথা বলে মিথ্যা বলে, ওয়াদা করলে বরখেলাপ করে এবং আমানত রাখলে এতে খেয়ানত করে।

হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন- যার মধ্যে আমানতদারিতা নেই, তার ঈমানও নেই। আর যে ওয়াদা পালন করে না তার মধ্যে দ্বীন নেই।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.