ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে ঐক্যের আহ্বান তুরস্কের
গাজায় ইসরাইলের গণহত্যার বিরুদ্ধে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। এজন্য মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোকে এক চেতনায় বলিয়ান হওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) মিশরের রাজধানী কায়রোতে আরব লীগের ১৬২তম পররাষ্ট্র অধিবেশনের উদ্বোধনী বক্তৃতায় এ সব কথা বলেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মিশরে মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রতি সমর্থনের কারণে তুরস্ক এবং মিশরের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি হয়। এরমধ্যে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ১২ বছর পর তুর্কি সফরে যান মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। এবার দীর্ঘ ১৩ বছর পর তুরস্ক প্রথমবারের মতো আরব লীগের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেয়।
আরব লীগের বৈঠকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলের সামরিক পদক্ষেপ এবং গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তোলার বার্তা দেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান।
চলমান পরিস্থিতিতে আরব লীগের সক্রিয়তা কিছুটা হলেও ফিলিস্তিনিবাসীদের জন্য ইতিবাচক খবর। কারণ আরব লীগ অচল থাকলে সবচেয়ে বেশি ফায়দা তুলবে ইসরাইল।
হাকান ফিদান বলেন, ‘হারাম শরীফ (৩য় পবিত্র মসজিদ আকসা) এর পরিচয় ও বিশেষত্ব রক্ষায় যা যা করা দরকার মুসলিম বিশ্ব তা করবে। জেরুসালেম ও মসজিদে আকসার ঐতিহাসিক পরিচয় ও বিশেষত্ব পরিবর্তনে ইসরাইল বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নিয়মিত হারাম শরীফে (৩য় পবিত্র মসজিদ আকসা) তাণ্ডব ও নির্লজ্জ উস্কানির লক্ষ্যে পুলিশী সুরক্ষায় শত শত উগ্র ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীকে লেলিয়ে দিচ্ছে’।
তিনি আরো বলেন, ‘এক চেতনায় বলিয়ান হয়ে ইসরাইল ও তাদের কর্মকাণ্ডকে প্রত্যাখ্যান করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমরা সম্মিলিত পদক্ষেপ নিবো। আরব দেশ, মুসলিম দেশ, ফিলিস্তিনি গ্রুপ ও জাতিসংঘের মতো সংস্থাগুলোকে আমি তাদের অবস্থান ও ক্ষমতা জোরদার করার অনুরোধ জানাচ্ছি। অনুরোধ জানাচ্ছি নিজ অবস্থান ও ক্ষমতার সঠিক ব্যবহারের। একমাত্র তখনই আমরা এই বর্বরোচিত যুদ্ধচক্র থামিয়ে দিতে সক্ষম হবো’।
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংযোজন, ‘আগের দফার আগ্রাসনে দায়সারাভাব দেখানোর পরিণতিতে আমাদের আজ ভয়াবহ রক্তপাত দেখতে হচ্ছে। এবার আমাদের আগের মতো হওয়া যাবে না। যারা এসবের জন্য দায়ী তাদের অবশ্যই আন্তর্জাতিক আদালতে অপরাধী সাব্যস্ত করাতে হবে। তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। যারা খুনী ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ নিবে তারাও গণহত্যার জন্য সমান দায়ী থাকবে’।
তুরস্ক সর্বশেষ আরব লীগের বৈঠকে অংশ নিয়েছিল ২০১১ সালে কায়রোতে। তখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রিসেফ তাইয়্যেপ এরদোগান আরব লীগের মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছিলেন।
বর্তমানে আরব লীগের ২২টি সদস্য রাষ্ট্র রয়েছে। ১৯৪৫ সালের মার্চ মাসে কায়রোতে সাত আরব দেশ নিয়ে এটি গঠিত হয়।