আদালতে দ্রুত বিচার চাইলেন বাবা

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার দ্রুত বিচার চাইলেন আবরারের বাবা মো. বরকত উল্লাহ।

সোমবার বিচারিক আদালত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে এই দাবি জানান তিনি।

এদিকে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি আবারো পিছিয়েছে। বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ আগামী ১৮ মার্চ শুনানির তারিখ ধার্য করেন। এবারও শুনানির সময় আদালত বলেন, মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু এখনও প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। তাই আগামী তারিখ অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য রাখা হলো।

গত ৩০ জানুয়ারিও অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির তারিখ ধার্য ছিল। একই কারণে ওইদিনও শুনানির তারিখ পেছানো হয়। এবার অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য কারাগারে থাকা ২২ আসামিকেই আদালতে হাজির করা হয়।

শুনানির সময় আবরারের বাবা আদালতের কাছে মামলাটির বিচার যাতে দ্রুত হয় সেই আর্জি জানান। আদালত বলেন, মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। আদালত আবরারের বাবাকে সরকারের কাছে একটি আবেদন করারও পরামর্শ দেন।

এই মামলার পলাতক তিন আসামি মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান (বাড়ি রংপুর জেলার কোতোয়ালী থানার কেসি রায় রোড), এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম (বাড়ি সৈয়দপুর জেলার নীলফামারি থানার নেয়ামতপুর মুন্সিপাড়া গ্রাম) ও মুজতবা রাফিদের (বাড়ি-দিনাজপুর জেলার কোতোয়ালী থানার উত্তর বালুবাড়ি) অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।

গত ১৩ জানুয়ারি মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ার পর নথি মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। এর আগে ১২ জানুয়ারি মো. মোর্শেদ ওরফে মোর্শেদ অমত্য ইসলাম আদালতে আত্মসমর্পন করার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার তদন্ত চলাকালে ২১ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সবাই কারাগারে আছেন। তারা হলেন মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মো. মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এস এম মাহমুদ সেতু।

গত বছর ১৩ নভেম্বর আবরার হত্যা মামলায় ২৫ জনকে আসামি করে চার্জশিট দেওয়া হয়। চার্জশিটভুক্ত সব আসামি বুয়েটের ছাত্র ও ছাত্রলীগের রাজনীরি সঙ্গে জড়িত।

উল্লেখ্য, ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে গত বছর ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরে বাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ফাহাদের বাবা মো. বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তে জানা গেছে, রাত দশটা থেকে একটানা রাত ২টা পর্যন্ত আবরারকে শিবির সন্দেহে পেটানো হয়। ক্রিকেট স্ট্যাম্প, স্কিপিং দড়ি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। কিলঘুষি, লাথিও মারা হয়।

এ মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আট আসামি। তারা হলেন ইফতি মোশাররফ হোসেন সকাল, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, অনিক সরকার, মো. মুজাহিদুর রহমান, মনিরুজ্জামান মনির, এ এস এম নাজমুস শাদাত ও তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.