২৯তম স্প্যান বসানো হয়েছে পদ্মা সেতুর, ৪ হাজার ৩৫০ মিটার দৃশ্যমান

মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সোমবার পদ্মা সেতুর ২৯তম স্প্যান বসানো হয়েছে। সেতুর ১৯ ও ২০ নম্বর পিলারের উপর ‘ফোর-এ’ নামে এ স্প্যানটি বসানো হয়। এরই মধ্য সেতুর ৪ হাজার ৩৫০ মিটার অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে। এর আগে ১১ এপ্রিল সেতুর ২৮তম স্প্যান বসানো হয়।

গত রোববার সকাল ৮ টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কন্সট্রাক্টশন ইয়ার্ড থেকে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যান নিয়ে সেতুর নির্ধারিত পিলারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের পিলারের কাছাকাছি নিয়ে স্প্যানটি রাখা হয়। পরে সোমবার সকাল থেকে কয়েক ঘণ্টা সময় নিয়ে সেতুর ১৯ ও ২০ নম্বর পিলারের উপর ‘ফোর-এ’ নামে এ স্প্যানটি বসানো হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের।

তিনি জানান, গত রোববার স্প্যান বহনকারী ক্রেনটি ১৯ ও ২০ নম্বর পিলারের কাছে নোঙর করে রাখা হয়। স্প্যানটি বসানোর ফলে সেতুর ৪ হাজার ৩৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে।

প্রকৌশলী সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে সেতুর ২৯৪ টি পাইল ও ৪২ টি পিয়ারের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ৪১টি স্প্যানের মধ্যে মাওয়া প্রান্তে স্থাপন করা হয়েছে ১০টি, নদীর মাঝের স্প্যান স্থাপন করা হয়েছে ১টি, জাজিরা প্রান্তে স্থাপন করা হয়েছে ১৮টি, অর্থাৎ মোট ২৯টি স্প্যান স্থাপন করা হয়েছে। আর বাকি থাকলো ১২টি স্প্যান। সেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে মাওয়া এসেছে ৩৯টি। যার মধ্যে ২৯টি স্থাপন করা হয়েছে এবং ১০ টি মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ওয়েল্ডিং, এ্যসেম্বলি ও পেইন্টিং এর কাজ চলছে। বাকি ২টি স্প্যান যা মিলে ২৩০টি নোড/কর্ড অংশ, এরই মধ্যে ১৯৩ চীন হতে মংলা বন্দরে পৌঁছেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মাওয়া পৌঁছে যাবে আশা করা যায়। অবশিষ্ট সর্বশেষ ৩৭ টি নোড/কর্ড অংশ চীনে তৈরি শেষে শিনহোয়াংডাও বন্দরে লোডিং হচ্ছে এবং তা ৫ মে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিবে এবং জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে মাওয়া পৌঁছবে।

সাধারণত পদ্মায় প্রতিবছর বর্ষাকালে উজান থেকে প্রচুর পলি (প্রায় ২ বিলিয়ন টন পলি/সেডিমেন্ট) এসে মূল সেতুর পিয়ার- ১৭-৩৮ পর্যন্ত খননকৃত চ্যানেল বন্ধ করে দেয়। পরবর্তী শুষ্ক মৌসুমে সেতুর জাজিরা প্রান্তে ড্রেজিং জটিলতা এড়ানোর জন্য পরবর্তী স্প্যান দুটি যত দ্রুত সম্ভব (৩০ শে জুনের আগেই) এ মৌসুমেই পিয়ার ২৬-২৭-২৮ এর উপর স্থাপন করা হবে। এ সিডিউল মেনে স্প্যান বসাতে পারলে আগামী বছরের জুলাই নাগাদ ৪১টি স্প্যান বসানো শেষ হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়া

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.