‘সোনালী কাবিন’ এর কবি আল মাহমুদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

“নারকেলের ঐ লম্বা মাথায় হঠাৎ দেখি, কাল ডাবের মতো চাদঁ উঠেছে ঠান্ডা ও গোলগাল”- বাল্যকালে দারুণ ছন্দের এ কবিতাটি আবৃত্তি করে আনন্দ পাননি, এমন বাংলাদেশী খুব কমই আছেন।
আজ সেই ‘সোনালি কাবিন’ খ্যাত কবি আল মাহমুদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী।

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদ গত বছর এইদিনে রাত ১১টা ৫ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।

কবির পুরো নাম ছিল মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। একাধারে তিনি ছিলেন একজন কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক।

একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ নানা সময়ে নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি। লোক লোকান্তর (১৯৬৩), কালের কলস (১৯৬৬), মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো (১৯৭৬), আরব্য রজনীর রাজহাঁস, বখতিয়ারের ঘোড়া ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য অনবদ্য সৃষ্টি। কিন্তু কবিকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে নিয়ে যায় কাব্যগ্রন্থ ‘সোনালী কাবিন’ (১৯৬৬)।

কবির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার মহাকাব্য ‘এ গল্পের শেষ নেই শুরুও ছিল না’ প্রকাশ করেছে সরলরেখা প্রকাশনা সংস্থা।

ইতোমধ্যে আল মাহমুদের ‘সহোদরা’ ও ‘রাগিণী’ নামে দুটি নতুন উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। অন্যদিকে মুজিববর্ষের বিশেষ প্রকাশনা হিসেবে তাঁর নতুন কাব্যগ্রন্থ ‘ইতিহাস দেখো বাঁক ঘুরে গেছে ফের ইতিহাসে’ এবং ছড়ার বই ‘আমার নামে ডাকছে পাখি’ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। আল মাহমুদের সাহিত্য জীবনের গোধূলি লগ্নের ছায়াসঙ্গী ও সহলেখক হিসেবে এ পাঁচটি বইয়ের গ্রন্থনা ও সম্পাদনা করেছেন লেখক ও সাংবাদিক আবিদ আজম। বইগুলো পাওয়া যাবে ৬১৮ নম্বর স্টলে।’

এদিকে আল মাহমুদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও তাঁর জন্মভিটায় পৃথক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আল মাহমুদ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কবি আবিদ আজম মাল্টিনিউজটোয়েন্টিফোরকে বলেন, ‘কবির প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর কবিতা ক্যাফেতে শনিবার বিকেল ৫টায় ‘আল মাহমুদ স্মরণ’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। একই দিনে চট্টগ্রামের থিয়েটার ইনস্টিটিউটে ‘ক্বণন শুদ্ধতম আবৃত্তি অঙ্গণ’র আয়োজনে বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণানুষ্ঠান। সেখানে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর নূরুল আমিনসহ আরও অনেকেই।’

আবিদ আজম বলেন, ‘কবির জন্মভিটা ব্রাহ্মণবাড়িয়া মৌড়াইলে সকালে স্মরণানুষ্ঠান ছাড়াও কবির কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন ও ফাতেহা পাঠ করা হবে। তাছাড়া আল মাহমুদ স্মারকগ্রন্থ প্রকাশনা ছাড়াও কবির প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে বড় পরিসরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযোদ্ধা এ কবিকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার দাবি জানিয়েছে কবি পরিবার।’

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.