‘সঙ্গে সঙ্গে বিমান থেকে বোমাবর্ষণ। পাক সেনাপতির তখন চৈতন্যোদয় হয়।’

পাকিস্তান হার মানল
নিয়াজির বিনাশর্তে আত্মসমর্পণ

বাংলাদেশে দখলদার পাক ফৌজ বৃহস্পতিবার আত্মসমর্পণ করেছে। এবং আত্মসমর্পণ করছে বিনাশর্তে। ঐ ফৌজের সর্বাধিনায়ক লেঃ জঃ নিয়াজি আত্মসমর্পণের শর্তাদি নিয়ে আলোচনার জন্য ইষ্টার্ন কমান্ডের অধ্যক্ষ মেঃ জঃ জেকবকে ঢাকায় যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। জেঃ জেকব তদানুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালেই হেলিকপ্টারে ঢাকা রওনা হয়ে যান।

এই সম্পর্কে নয়াদিল্লী থেকে প্রকাশিত এক সরকারী ঘোষণায় বলা হয়েছেঃ জেনারেল মানকেশ আত্মসমর্পণেরযে আহবান জানিয়েছিলেন, আজ সকালে লেঃ জেঃ নিয়াজী তাতে সাড়া দেন। ঢাকা থেকে মাইক্রোওয়েভ মারপত তিনি আত্মসমর্পণে রাজি হওয়ার কথা জানান।

জেনারেল মানেকশ আত্মসমর্পণের সময়-সীমা বেধে দিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা। কিন্তু তখন পর্যন্ত জেঃ নিয়াজির কাছ থেকে কোন সাড়া শব্দ না পাওয়ায় ভারতীয় বিমান বহর ঢাকার সামরিক লক্ষ্য বস্ত্তগুলির উপর বোমাবর্ষণ এবং সেন্য বাহিনী পুনরায় ঢাকার সামরিক ঘাটিগুলির উপর গোলাবর্ষণ শুরু করে। এর কিছু পরেই পাওয়া যায় আত্মসমর্পণের খবর।

জেনারেল নিয়াজির কাছ থেকে সর্বশেষ যে বার্তা পাওয়া গিয়েছে তাতে তিনি আরও ছয় ঘণ্টা বোমাবর্ষণ বন্ধের জন্য আরজি জানিয়েছেন। সেই আরজিতে সায় দিয়ে বেলা তিনটা পর্যন্ত বোবমাবর্ষণ মূলতবি রাখা হয়েছে।

সকাল পর্যন্ত চুপচাপ

জেনারেল মানেকশ আত্মসমর্পণের সময়-সীমা বেধে দিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা। কিন্তু জেনারেল নিয়াজি তখন পর্যন্ত কোন উচ্চবাচ্য করেননি। ফলে ভারতীয় ফৌজ নয়টার পর ফের গোলগুলি বর্ষণ শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গে বিমান থেকে বোমাবর্ষণ। পাক সেনাপতির তখন চৈতন্যোদয় হয়। আত্মসমপর্ণে তিনি রাজি হন, মানকেশ’র কাছে বার্তা পাঠান এবং আত্মসমপর্ণের শর্তাদি নিয়ে আলোচনার জন্য জেনারেল জেকবকে ঢাকায় আমন্ত্রণ জানান।

সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা বিশেষ সংখ্যা ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.