লিবিয়া থেকে ফিরেছেন ১৬৪ বাংলাদেশি

লিবিয়ার মিজদাহ শহরে হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া নয় অভিবাসীসহ ১৬৪ বাংলাদেশি স্বেচ্ছায় বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরে এসেছেন।

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বুধবার তারা অবতরণ করেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

গত মে মাসে লিবিয়ার মিজদাহ শহরে পাচারকারীদের গুলিতে ৩০ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি ছিলেন।

আগত ফ্লাইটে ১০০ বিপদাপন্ন অভিবাসী ছিলেন যাদের মধ্যে ৩৯ জন শারীরিকভাবে অসুস্থ। অভিবাসীদের তাৎক্ষণিক সহায়তার জন্য তাদের সঙ্গে ভ্রমণ করেন আইওএম’র মেডিকেল সহায়তা প্রদানকারীরা।

সরকার-নির্ধারিত কোয়ারেন্টাইন শেষে অসহায় অভিবাসীদের পুনরায় একত্রীকরণে সহায়তা করবে আইওএম।

লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মিজদাহর ঘটনায় গুরুতর আহত হন ১১ বাংলাদেশি অভিবাসী।

মিজদাহর আক্রমণের শিকার বাংলাদেশি অভিবাসীমোহাম্মদ সৈয়দ খান বলেন, আমি এই ঘটনা কিছুতেই ভুলতে পারছি না। এটা আমার কাছে দুঃস্বপ্নের মত। আমার শরীরে গুলি লাগে এবং চার মাস পর আমি দেশে ফেরার মত সুস্থ হই। এখনো অনেকেই পুরোপুরি সুস্থ হননি এবং আমরা এখনো আতঙ্কিত।

আইওএম এর কাছ থেকে শরীরিক চিকিৎসা ও মনোসামাজিক সেবার পাশাপাশি আর্থিক সহায়তা পাবেন সৈয়দ খান।

আইওএম বাংলাদেশ-এর মিশন প্রধান গিওরগি গিগাওরি বলেন, কোভিড-১৯ সমগ্র বিশ্বের অভিবাসী কর্মীদের বিপদাপন্নতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে। অবরুদ্ধ এবং অসহায় অভিবাসীদের সহায়তায় এগিয়ে যেতে আমরা চলাচলসহ নানা নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে উঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। অভিবাসীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, আশ্রয়, খাদ্য, কনস্যুলার সেবা এবং সর্বোচ্চ বিপদাপন্নদের জন্য দেশে ফেরত আনার ফ্লাইট নিশ্চিত করতে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে, বিশেষ করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একত্রে কাজ করে যাচ্ছি।

বাংলাদেশে বিদেশ থেকে আসা অধিকাংশ অভিবাসীই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করেন। মার্চ থেকে বাংলাদেশ সরকারের কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি)’র সঙ্গে সমন্বিতভাবে আইওএম বাংলাদেশ এই বিমানবন্দরে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ও কোভিড-১৯ সন্দেহভাজন ভ্রমণকারীদের চিহ্নিতকরণ, পর্যবেক্ষণ এবং রেফার করতে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। দেশের ২৮টির মধ্যে ২০টি প্রবেশ কেন্দ্রে সরকারকে সহায়তা করছে আইওএম। প্রবেশকেন্দ্রে কোভিড-১৯ সাড়াপ্রদান কার্যক্রম ও প্রক্রিয়া অভিবাসীদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রবেশকেন্দ্রে অগ্রভাগে কর্মরত কর্মী এবং জনগোষ্ঠীর কোভিড-১৯ হতে সুরক্ষা নিশ্চিত করছে।

আফ্রিকার মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় পথে অভিবাসীদের সুরক্ষা, স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তন এবং পুনরায় একত্রীকরণ ব্যবস্থার উন্নয়নে ‘ইমার্জেন্সি ট্রাস্ট ফান্ড ফর আফ্রিকা (ইইউটিএফ)’-এর মাধ্যমে আফ্রিকায় অভিবাসীদের সুরক্ষা ও পুনরেকত্রীকরণে আইওএম এর সঙ্গে ২০১৬ সালে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। ইইউটিএফ-এর সহায়তায় বাংলাদেশে ফিরেছেন ১৬৪ জন অভিবাসী।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.