রাজনীতিতে জামায়াতের সাবেক নেতা ব্যারিস্টার রাজ্জাক

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল থেকে পদত্যাগকারী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক আবোর রাজনীতিতে ফিরেছেন। ২০২০ সালে গঠিত আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দিলেও তা প্রকাশ করা হয় দল প্রতিষ্ঠার একবছর পরে।

রবিবার (২ মে) আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল ব্রিফিংএ তার এ যোগদানের ঘোষণা দেওয়া হয়।

রবিবারের অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে যুক্ত হয়ে এবি পার্টির প্রধান উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের যে প্রতিশ্রুতি স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রে দেওয়া হয়েছে, জনগণের জন্য তা নিশ্চিত করার অঙ্গীকারের মাধ্যমে এবি পার্টির যাত্রা শুরু। বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম ইসলামে এই তিনটি অধিকারের সম্পূর্ণ নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে।’

প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। দলের আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী ও সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মন্জু সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, আমার বাংলাদেশ পার্টির এক বছর পূর্তি এটা আমাদের দেশের জন্য খবুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার। বিগত পঞ্চাশ বছরে যে রাজনীতির ধারা দেখা গিয়েছে, এতে জনগণ অনেকটা আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। এই নতুন পার্টির আগমনে একটি ঘাটতি পূরণ হবে। এই সরকারের অধীনে গনতান্ত্রিক সংস্কৃতির অবক্ষয় হয়েছে। উদার ও গনতান্ত্রিক একটা কালচার বাংলাদেশে ফেরত আনতে হবে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমি এবি পার্টির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর খবর শুনে আনন্দিত। এবি পার্টি গত এক বছর লাগাতার কাজ করেছে। দেশের আপামর মানুষের জন্য, গনতন্ত্র, তাদের মৌলিক অধিকার এক কথায় মানুষের কল্যানের স্ব-পক্ষে তারা লড়াই করেছে। আমার বাংলাদেশ পার্টি একটি কল্যান রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করছে। শুভেচ্ছা বক্তব্যে কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক বলেন, এবি পার্টি কভিড-১৯’র সময় জন্ম নিয়েছে সাহস করে; এবি পার্টি নতুন দল হলেও নেতৃত্ব ও ব্যক্তিগুলো নতুন নয়, তারা প্রবীন ও অভিজ্ঞ। আমি এবি পার্টির কাছে আবেদন করবো তরুনদের ধরে রাখুন, তরুন পেশাজীবিদের রাজনীতিমনস্ক করুন, তাদেরকে রাজপথে আনুন, কারণ তারাই আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।

সাবেক সংসদ সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি বলেন, আমি আশা করি এবি পার্টি বাংলাদেশের নির্যাতিত মানুষের পাশে, গনতন্ত্রের পাশে, নারী জাগরণের পাশে হাজার বছর ধরে থাকুক। আমি এবি পার্টির তরুন নেতৃত্বের মাঝে যে স্ফুলিঙ্গ দেখেছি, সে স্ফূলিঙ্গ বাংলাদেশকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে।

কভিড পরিস্থিতির কারণে অনুষ্ঠানে এবি পার্টির জন্মদিন কে শুভেচ্ছা জানিয়ে রেকর্ডেড ভার্চুয়াল বক্তব্য রাখেন- মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক, রাজনীতিক ও অর্থনীতিবিদ ড. রেজা কিবরিয়া, সাবেক ডাকসু ভিপি ও নাগরিক ঐক্যের প্রধান মাহমুদুর রহমান মান্না, রাষ্ট্র বিজ্ঞানী ড. দিলারা চৌধুরী, কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতিক, সাবেক এমপি নিলুফার চৌধুরী মনি, সাবেক উপমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার মিলন, লেখক ও কলামিস্ট শ্রী গৌতম দাস, ধর্মীয় ব্যাক্তিত্ব মাওলানা ড. মোঃ নজরুল ইসলাম আল মারুফ, বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু ও শিক্ষাবিদ ড. সুকোমল বড়ুয়া প্রমূখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মন্জুর সঞ্চালনায় আয়োজিত এই সভায় আরো উপস্হিত ছিলেন দলের যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ্যাড. তাজুল ইসলাম, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার যুবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া, বিএম নাজমুল হক, সহকারী সদস্য সচিব এ্যাডঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা প্রমূখ।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের পুরো বছর সারাদেশে জনসংযোগ ও নানান যাচাই-বাছাই শেষে রাজধানীর বিজয় নগরের দলীয় কার্যালয় থেকে ২০২০ সালের ২ মে যাত্রা শুরু করে এবি পার্টি।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.