পৃথিবীকে বাঁচাতে আজই পদক্ষেপ নিতে হবে

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ঠেকাতে কার্বন নিঃসরণ বন্ধে ধনী দেশগুলোকে প্রধান ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীকে বাঁচাতে হলে আগামীকাল নয়, আজই পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।’

মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) ফরেন পলিসি ভার্চুয়াল ক্লাইমেট সামিটে ভিডিও-বার্তায় এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কোনও নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই। যদি একটি দেশ কার্বন নিঃসরণ করে, তবে এতে প্রতিটি দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুতরাং, প্রতিটি দেশকে এর বিরুদ্ধে ভূমিকা পালন করতে হবে। ধনী দেশগুলো, বিশেষ করে জি-২০ ভুক্ত দেশগুলোর উচিত বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ বন্ধে প্রধান ভূমিকা পালন করা।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিচের দিকে ১০০টি দেশ ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বৈশ্বিক গ্রিন হাউজ গ্যাস কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী, যেখানে জি-২০ দেশগুলো ৮০ শতাংশ কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী।’

বর্তমান কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গোটা বিশ্ব কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে একটি কঠিন সময় পার করছে। কোভিড-১৯ ভাইরাসে বিপুল সংখ্যক মানুষ মারা গেছে এবং প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ছোবল থেকে আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা দরকার।’

জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সময়ে কোভিড-১৯ মহামারির পরে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু। জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিটি দেশের জন্য এখন অনেক বড় হুমকি। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য।’

ক্রমাগত বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে টানা তিনবারের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ছে। এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নাই। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধিই সকল অনিষ্টের মূল। ক্রমাগত বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি মানবজাতির জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী, আমরা বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়ানের নিচে রাখতে সম্মত হয়েছিলাম। কিন্তু তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ বন্ধে বাস্তবে কিছেই হয়নি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাস, বজ্রপাতসহ ঘন ঘন বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুযোর্গ এবং এসব দুযোর্গের ধ্বংসযজ্ঞের মুখোমুখি হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘গেল বছর বন্যায় বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ পানির নিচে নিমজ্জিত হয়। সুপার স্লাইকোন আম্পানসহ বেশ কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত করে। আর এসব কিছু হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ গ্রিন হাউজ নিঃসরণকারী নয়, যদিও ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সদস্য দেশগুলো উল্লেখযোগ্য নিঃসরণকারী নয়। তারপরও আমরাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী। প্রতিবছর চরম জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন দুর্যোগে বাংলাদেশ জিডিপির ২ শতাংশ হারাচ্ছে।’

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.